মোখলেছুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার ঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকার প্রার্থী হতে চান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়া সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে পুনরায় তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সামাজিক আচার অনুষ্ঠান, বিবাহোৎসব, কারো মৃত্যুর সংবাদে শোক সন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকাসহ বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর সময়ে সহনাটী ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ′′বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য যেমন করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাতে করে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে আর বেশি দেরি হবেনা। তাঁর একজন কর্মী হয়ে আমি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে শেখ হাসিনার উন্নয়নবার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি ।”
তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি তাঁর ইউনিয়নকে একটি আধুনিক ইউনিয়নে পরিণত করার জন্য পাছার বাজার হতে ভালুকাপুর বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, অন্যদিকে পাছার বাজার হতে ধোপাজাঙ্গালিয়া মোড় পর্যন্ত ১ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, সহনাটী পাছপাড়া মোড় হতে রাইশিমুল মসজিদ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, তাতিরপায়া মোড় হতে সুনামপুর মোড় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পাকা রাস্তা, কুকোয়ালি মোড় হতে গিধাউষা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পাকা রাস্তা, পাছার বাজার হতে বেখৈরহাটি বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ও জুগিডাঙ্গুরি বড়খালের উপর একটি বড় ব্রিজ নির্মাণ এবং জলবুরুঙ্গা নদীর উপর দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করে (যার আশি শতাংশ কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে) পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনি বর্ষায় যে এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি কাদা হতো সেসব এলাকার মধ্যে জুগিডাঙ্গুরি হতে মাসকান্দা পর্যন্ত ২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ধোপাজাঙ্গালিয়া পাকা রাস্তা হতে সানিয়াপাড়া নতুন বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ভূঁইয়ারবাজার হতে পল্টিপাড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, সহনাটী মুছারবাড়ি পাকা রাস্তা হতে পাত্রাইল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ধোপাজাঙ্গালিয়া পাকা রাস্তা হতে টেংগাপাড়া হয়ে বড়ইবাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরী ও মেরামত করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করে দিয়েছেন।
আব্দুল মান্নান শুধু রাস্তাঘাট উন্নয়নের দিকেই নজর দেননি বরং তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে সিলিংফেন, আলমারি, চেয়ার, টেবিলসহ বিভিন্ন শিক্ষাউপকরণ বিতরণ করেন। পাছার ছামাদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ২ কক্ষবিশিষ্ট ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ঘর তৈরী করে দেন এবং একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন সুবিধাভুগী জনগোষ্ঠীর জন্য ৩ হাজার জনকে বয়স্ক ও বিধবাভাতাসেবা, প্রতিমাসে ৭ শত টাকা করে ৪ শত জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান, ৩ শত জন গর্ভবতী মহিলাকে এককালীন ১২ হাজার টাকা করে প্রদান, ২ হাজার ১ শত লোককে ১০ টাকা কেজি চালের সুবিধা প্রদান, ৭ শত জনকে বিনামুল্যে ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করেন। এছাড়া বয়স্ক ও বিধবাভাতা মানুষের বাড়ি গিয়ে তাদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়ে জেলায় শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
আব্দুল মান্নান সামাজিক, রাজনৈতিক ও সমাজসেবামূলক বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কৃতিত্বস্বরুপ পেয়েছেন একগাদা পুরস্কার। তার মধ্যে ২০১৬ সালে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক স্বর্ণপদক, জেনারেল উসমানী স্বর্ণপদক-২০১৬, জেনারেল উসমানী এ্যাওয়ার্ড-২০১৭, মানবাধিকার পিস এ্যাওয়ার্ড-২০১৭, লোকাল রোরাল ডেভেলপমেন্ট এ্যাওয়ার্ড-২০১৭, ইউনিয়ন পরিষদ স্বর্ণপদক-২০১৮, ময়মনসিংহ জেলায় শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে লোকাল উইমেন স্কিল ডেভেলপমেন্ট রেপুটেশন-২০১৮ অর্জন। এছাড়া বাংলাদেশ ইউনিয়ন ফোরাম এর আজীবন সদস্যপদ লাভ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ′′আমার দায়িত্ব পালনকালে এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এর আগে শুধু সরকারি বাজেট আসতো কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হতোনা। আর আমি আমার পুরো ইউনিয়নকে আমার মতো করে সাজিয়েছি। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে আমার ইউনিয়নে মাদকের আড্ডাখানা ছিলো। ষাঁড়ের লড়াইকে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর বসানো হতো। কিন্তু এখন সারা ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদকের আড্ডা এসবের কিছুই নেই।” তিনি আরো বলেন, আমি একজন সামাজিক মানুষ। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একসাথে নিয়ে চলতে চাই। সেজন্য আমি আবারও পুরো ইউনিয়নবাসীর সেবা করার জন্য দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।”